স্টাফ রিপোর্টারঃ সুস্থ মানুষকে গুরুতর জখম সাজিয়ে ভুয়া এক্স-রে রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে হবিগঞ্জ শহরের ইউনাইটেড শিশু ও জেনারেল হাসপাতাল থেকে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) পুলিশ এদেরকে আদালতে পাঠিয়েছে। গ্রেফতাররা হলেন- হাসপাতালটির ল্যাব টেকনিশিয়ান রুকনুজ্জামান ও মার্কেটিং কর্মকর্তা রুবেল মিয়া। গত বৃহস্পতিবার রাতে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের উপ পরিদর্শক (এসআই) সজিব মিয়া তাঁদেরকে গ্রেফতার করেন। পুলিশ জানায়, গত ২৪ অক্টোবর হবিগঞ্জের অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়াছির আরাফাতের আদালতে একটি মামলা দায়ের হয়। মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) পাঠান বিচারক। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২৩ সেপ্টেম্বরের একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করে লাখাই উপজেলার মনতৈল গ্রামের খেলু মিয়া নামে এক ব্যক্তি একই গ্রামের হিরা মিয়াসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। সেই মামলায় খেলু মিয়া, রিপন মিয়া, রাহেলা বেগম ও আনোয়ার আলীকে জখম হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। আদালত থেকে জখমের প্রমাণ চাইলে ৪টি এক্স-রে রিপোর্ট দেখানো হয়। রিপোর্টগুলোতে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখমের দেখানো হয়। পরে আদালত হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে মেডিক্যাল সনদপত্র দেওয়ার জন্য আদেশ দেন। কিন্তু যেহেতু সদর হাসপাতালে এক্স-রে করা হয়নি সেজন্য কোন হাসপাতাল থেকে রিপোর্ট আনা হয়েছে সেটি জানার জন্য জখম হওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এক্স-রেগুলো হবিগঞ্জ শহরের ইউনাইটেড শিশু ও জেনারেল হাসপাতাল থেকে করা হয়েছে বলে সদর হাসপাতালকে জানান বাদী। এ বিষয়ে মামলার আইনজীবী ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া ও খোকন চন্দ্র গোপ বলেন, মামলায় উল্লেখ করা আহতদের শরীরে তেমন কোন আঘাত ছিল না। অথচ এক্সে-রে রিপোর্ট অনুযায়ী তাদের মাথার খুলি গুরুতরভাবে জখম হয়েছে। পরে ইউনাইটেড হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় আহতদের এক্স-রে করেননি। অন্য ব্যক্তিদের এক্স-রে রিপোর্টে ঘষামাজা করে নিজেদের নাম বসিয়ে আদালতে দেখানো হয়েছে। পুলিশ জানায়, আদালত এমন আরও কিছু মামলা রয়েছে। যেগুলোতে এক্স-রে রিপোর্টে কারচুপি করা হয়েছে। এ বিষয়ে সম্পর্কে বিচারক অবগত। গ্রেফতারদের দেওয়া ভুয়া এক্স-রে রিপোর্টের কারণে অনেক মানুষকে হয়রানি হতে হয়েছে। পুলিশও এসব বিষয় নিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়ে। এ ঘটনার সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত। তাদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
Leave a Reply