স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ জেলার লক্ষ্মীবাওর জলাবন সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মোঃ নূর-উর-রহমান ও তার সহধর্মিণী। গতাকল শনিবার (২১ নভেম্বর) তিনি পরিদর্শন করে মুগ্ধ হয়ে পর্যটন বিকাশে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন হবিগঞ্জ জেলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ রানা ও বন বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ। ডিসি মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, লক্ষ্মীবাওর জলাবনকে জনপ্রিয় পর্যটন স্পটে পরিণত করার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসন। বিশেষ করে এই শীতে কেউ যেন অতিথি পাখি শিকার করতে না পারে সে লক্ষ্যে সবাইকে সচেতন থাকার জন্য আহবান জানান। হবিগঞ্জের হাওর দেশের সম্পদ, এই সম্পদ রক্ষার দায়িত্ব সকলের। কোনভাবেই যেন কোন জলমহাল ইজারাদার বিল, হাওর সম্পূর্ণ সেচ করে মাছ না ধরে সে জন্য সকলকে অনুরোধ জানান। মৎস্য আর ধান, বানিয়াচং এর প্রাণ। সকলের ঐকান্তিক চেষ্টাই পারে আগামীর নান্দনিক বানিয়াচং গড়তে। জানা গেছে, জেলার বানিয়াচং উপজেলায় লক্ষীবাউর সোয়াম্প ফরেস্ট (জলাবন)। উপজেলার প্রান্তসীমানায় খড়তি নদীর দক্ষিণে বিশাল হাওরের মধ্যে এর অবস্থান। জলাবনটি এলাকাবাসীর কাছে খড়তির জঙ্গল নামেও পরিচিত। এই বনের উৎপত্তি সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়া যায়নি। জলাবনের বিচিত্র রূপ বিস্ময়কর। বর্ষাকালে চারদিকে হাওরের পানি আর জঙ্গলের অসংখ্য গাছপালার সবুজ অরণ্য পরিবেশকে নান্দনিক করে তুলেছে। দূর থেকে হাওরে জঙ্গলটিকে দেখলে মনে হয় যেন পানির ওপর ভাসছে। হিজল, করচ, বরুণ, কাকুরা, বউল্লা, খাগড়া, চাউল্লা, নলসহ অসংখ্য গাছ ও গুল্মে পরিপূর্ণ এই জলাবন এতদিন অনাবিষ্কৃতই ছিল। এখানে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, সরীসৃপ ও স্তন্যপায়ী জীবজন্তু। এগুলোর মধ্যে রয়েছে মেছোবাঘ, শিয়াল, গুঁইসাপ, কেউটে, লাড্ডুকা, দারাইশসহ অনেক বিষধর সাপ। বর্ষায় বিভিন্ন জাতের বক, পানকৌড়ি ও বালিহাঁস দেখা গেলেও শীতকালে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর হয়ে ওঠে নির্জন এই জলাবন। এছাড়া বনটিকে দেশি ও অতিথি পাখির অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়েছে।
Leave a Reply