বিশেষ প্রতিনিধি ॥ পর্যাপ্ত পরিমাণ লোকবল না থাকায় হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জের মৎস্য সম্প্রসারণ কেন্দ্রটি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলায় পড়ে আছে। জরাজীর্ণ অফিস, ট্রেনিং রুমের চেয়ার, টেবিল, ডরমেটরির দরজা, জানালা, খামারের সীমানা প্রাচীর ভাঙা, পুকুরের পাড়ও ভাঙা- এরকম অনেক সমস্যা নিয়েই চলছে এ কেন্দ্রটি। মাত্র একজন লোক থাকায় দেখভালের অভাবে মৎস্য হ্যাচারির প্রয়োজনীয় সরঞ্জামগুলো নষ্ট হচ্ছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ বলছেন ভিন্ন কথা, মাস্টার রোলে লোক নিয়োগ করে মাছের পোনা উৎপাদন করে যাচ্ছেন তারা। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ১৯৬১ সালে প্রায় সাড়ে ১২ একর জায়গা নিয়ে শায়েস্তাগঞ্জে মৎস্য সম্প্রসারণ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি স্থাপিত হয়। বিগত সময়ে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা উৎপাদন করে সাফল্য অর্জন করলেও এখন দেখভালের অভাবে ভালো নেই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি। প্রায় তিন বছর ধরে কেন্দ্রটিতে পাঁচ জনের বদলে মাত্র একজন রয়েছেন। এদিকে মাস্টার রুলে স্টাফ রয়েছেন দুইজন, অথচ এইখানে আরো চারটি পদ শূণ্য রয়েছে। মৎস্য খামারটির পাশ্ববর্তী কদমতলী গ্রামের নুর ইসলাম বলেন, মৎস্য কেন্দ্রটি আমাদের এলাকার সুবিধার্থের জন্য দেয়া হলেও এখন কোনো কাজে আসছে না। লোকবল না থাকায় এটি অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের মিজানুর রহমান জানান, খামারটি বহুদিন আগের। খামারে মাত্র একজন লোক থাকার কারণে অনেক সময় স্থানীয়রা খামারের ভেতরে প্রবেশ করে মাছসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নিয়ে যায়। এছাড়া মৎস্য খামারের ভেতরের যন্ত্রপাতিও নষ্ট হচ্ছে, ভেঙে যাচ্ছে কেন্দ্রটির নিরাপত্তা প্রাচীরও। শায়েস্তাগঞ্জ পৌর এলাকার দক্ষিণ বড়চর গ্রামের আব্দুর রউফ বলেন, অনেকেই কেন্দ্রটিতে মাস্টাররোলে কাজ পেলেও, বেতন সঠিকভাবে না পাওয়ায় কাজে থাকতে চান না। এ বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ মৎস্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের খামার কর্মকর্তা মো. নাছির উদ্দিনের বলেন, এই খামারে প্রতি বছর ২০৫ কেজি রেণু পোনা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা থাকে এবং এখান থেকে সরকার এবছর আট লাখ ৫৯ হাজার টাকা রাজস্ব পেয়েছে। তিনি আরও বলেন, মৎস্য খামারে যে পরিমাণ লোকবল থাকার কথা তা নেই। অতীতে দুইজন থাকলেও বর্তমানে আমি একাই মৎস্য খামারটি সামাল দিচ্ছি। মাস্টাররোলে লোক নিয়োগ করে মৎস্য উৎপাদনের টার্গেট পূরণ করতে পেরেছি। জরুরি ভিত্তিতে একজন গার্ড নিয়োগ করা প্রয়োজন বলেও জানান তিনি। এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ডিএফও) শাহাজাদা খসরু বলেন, মৎস্য অধিদফতরে বেশ কিছুদিন ধরেই জনবল সংকটে রয়েছে। খামারে পাঁচজন লোক থাকার কথা, তবে এখন তিনজন লোক রয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে যোগাযোগ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সিলেট বিভাগীয় উপ-পরিচালক ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এই খামারটি পরিদর্শন করে গেছেন, তারা আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন শিগগিরই জনবল নিয়োগ করা হবে বলে জানান তিনি।
Leave a Reply